সাতক্ষীরা উপকূলে বুড়িগোয়ালিনীতে পানির সংকটে চিংড়ি–কাঁকড়ার ব্যাপক ক্ষতি


প্রকাশের সময় : আগস্ট ১৬, ২০২৫, ১:৫১ অপরাহ্ণ
সাতক্ষীরা উপকূলে বুড়িগোয়ালিনীতে পানির সংকটে চিংড়ি–কাঁকড়ার ব্যাপক ক্ষতি

ফয়সাল আহাম্মেদ, বুড়িগোয়ালিনী (শ্যামনগর) প্রতিনিধি:

সাতক্ষীরার উপকূলীয় জনপদ শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী দুর্গাবাটি এলাকায় ২ হাজার বিঘা সমপরিমাণ মৎস্য ঘের পানির অভাবে ব্যাপক হারে চিংড়ি ও কাঁকড়া মারা যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় মৎস্যঘের মালিকরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে বেড়িবাঁধের ভেতরে বসানো নায়ন্টি অবৈধ পাইপ অপসারণ করার পর থেকেই এ সংকট দেখা দিয়েছে। পাইপগুলো দিয়ে নিয়মিত নদী থেকে পানি এনে ঘেরগুলোতে সরবরাহ করা হতো। কিন্তু পাইপ অপসারণের কারণে বর্তমানে ঘেরে নতুন পানি ঢোকানো সম্ভব হচ্ছে না।

এ বিষয়ে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ৬ নাম্বার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিকাশ মন্ডলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন

পানির প্রবাহ বন্ধ থাকায় মৎস্যঘেরের ভেতরের পানি দ্রুত গরম হয়ে যাচ্ছে এবং অক্সিজেনের ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। এতে প্রতিদিন শত শত চিংড়ি ও কাঁকড়া মারা পড়ছে। এতে মৎস্য ও কাঁকড়া খাতে ব্যাপকহারে ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ।

স্থানীয় একাধিক ঘের মালিক জানান, উপকূলীয় এলাকায় মাছ ও কাঁকড়া চাষই মানুষের প্রধান জীবিকা। কিন্তু হঠাৎ পানির সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চাষিরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ইতোমধ্যে অনেক চাষি ক্ষতির কারণে ধার–দেনায় জড়িয়ে পড়েছেন।

এ বিষয়ে দুর্গাবাটি এলাকার ঘের ব্যবসায়ী বিকাশ চন্দ্র বলেন, বেড়িবাঁধে পাইপ বসানো আইনত নিষিদ্ধ হলেও বিকল্প ব্যবস্থা না করে পাইপগুলো একসাথে তুলে ফেলায় আমরা চরম বিপাকে পড়েছি। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি বিশেষভাবে আহ্বান করি যাতে বিকল্প কোনো খাল, স্লুইসগেট বা বৈধ জলপ্রবাহের ব্যবস্থা করা হোক। নইলে উপকূলের হাজারো মানুষ জীবিকা হারানোর ঝুঁকিতে পড়বে।

স্থানীয় কাঁকড়া ব্যবসায়ী অনাথ মন্ডল জানান, বুড়িগোয়ালিনীসহ আশপাশের এলাকায় ঘের নির্ভরশীল প্রায় কয়েক হাজার পরিবার রয়েছে। এভাবে পানি সংকট চলতে থাকলে মাছ ও কাঁকড়া উৎপাদনে বড় ধরনের ধস নামবে। এতে স্থানীয় অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

এ বিষয়ে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,সাতক্ষীরার উপকূল জুড়ে বেশ কিছু থাট ফিশারির নির্মাণ করা স্লুইসগেট দীর্ঘদিন ধরে অযত্নে পড়ে আছে, পড়ে থাকা কলগেট গুলো সংস্থার করাহলে মৎস্য চাষে কোন প্রকার পানির ঘাটতে হতো না।

মৎস্যচাষিরা জানান, উপকূলীয় অঞ্চলে মাছ ও কাঁকড়া চাষ টিকিয়ে রাখতে পানি সরবরাহ সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ফিশারি প্রকল্পের কলগেটগুলো সংস্কার করা গেলে পানি প্রবাহ নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতিও চাঙা হবে বলে তাদের আশা।ঘের মালিকরা জরুরি ভিত্তিতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এবং দ্রুত বিকল্পভাবে পানি সরবরাহের রাস্তা তৈরির ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।