হুসাইন বিন আফতাব, নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাতক্ষীরা-৪ আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে শ্যামনগর উপজেলা এবি পার্টি। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকাল ১১টায় শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির নেতৃবৃন্দ খসড়া গেজেটে সংশোধিত সীমানা বাতিলের আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এবি পার্টির শ্যামনগর উপজেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ শাহীন আলম। তিনি বলেন, “সম্প্রতি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন থেকে ৩৯টি আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ সংক্রান্ত যে খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলাকে একীভূত করে সাতক্ষীরা-৪ আসন পুনর্গঠন করা হয়েছে, যা শ্যামনগরের আপামর জনগণের জন্য বিস্ময় ও উদ্বেগজনক।”
তিনি আরও বলেন, “সুন্দরবন তীরবর্তী ও সীমান্তঘেঁষা শ্যামনগরের সঙ্গে ভৌগলিক ও সাংস্কৃতিকভাবে ভিন্ন এবং দূরবর্তী আশাশুনী উপজেলাকে সংযুক্ত করা বাস্তবতাবিবর্জিত। দুটি উপজেলার মধ্যে কার্যত কোনো দৃঢ় সামাজিক, রাজনৈতিক বা ভৌগলিক সম্পর্ক নেই। যোগাযোগের মাধ্যমও অত্যন্ত দুর্বল—একটি করিডোর ও নৌপথ ছাড়া বিকল্প কিছু নেই।”
সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ২০০৮ সালে তৎকালীন সেনা সমর্থিত সরকারের সময়ে একটি দলকে বিশেষ সুবিধা দিতে গিয়েই কালিগঞ্জ ও শ্যামনগরকে একত্র করে পূর্বের সাতক্ষীরা-০৫ আসন বিলুপ্ত করা হয়। এবারেও একই ধরণের অযৌক্তিক ও উদ্দেশ্যমূলক পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়া শ্যামনগরবাসীর ন্যায্য অধিকারকে ক্ষুণ্ন করছে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে শ্যামনগর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উপজেলা হওয়ায় এটি নিজেই একটি একক সংসদীয় আসনের দাবি রাখে। তাছাড়া, পূর্বে সংযুক্ত কালিগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে শ্যামনগরের বিস্তৃত সীমানা, শক্তিশালী সড়ক যোগাযোগ এবং দীর্ঘদিনের সামাজিক-অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে, যা নতুন সীমানা নির্ধারণে উপেক্ষিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত খসড়ার কয়েকটি শর্ত—বিশেষ করে ‘ঙ’, ‘চ’, ‘ঞ’ ও ‘ট’ ক্রমিক শর্তাবলি—শ্যামনগর-আশাশুনী একীভূতকরণে লঙ্ঘিত হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়। তারা বলেন, এই পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়া ভৌগলিক বৈশিষ্ট্য, প্রশাসনিক সুবিধা, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও জনগণের যাতায়াত—সব কিছুকেই উপেক্ষা করেছে।
এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ তাদের দাবিতে বলেন, সদ্য প্রকাশিত খসড়া বাতিল করে শ্যামনগর উপজেলাকে ২০০৮ সালের পূর্বের ন্যায় একক আসন হিসেবে ঘোষণা করা হোক।
অন্যথায়, শ্যামনগর ও কালিগঞ্জকে যুক্ত করে নতুন পরিপত্র জারি করতে হবে।
এই প্রস্তাবও যদি উপেক্ষিত হয়, তাহলে এবি পার্টি জনগণের স্বার্থে প্রতিবাদে রাজপথে নামবে।”
সংবাদ সম্মেলনের শেষাংশে সকল রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, সাংবাদিক ও সচেতন নাগরিকদের প্রতি একত্রিতভাবে জনস্বার্থে আওয়াজ তোলার আহ্বান জানানো হয়।
আপনার মতামত লিখুন :