নির্বাচন কমিশনে আশাশুনিকে পৃথক আসন ঘোষণার দাবিতে আবেদন দাখিল


প্রকাশের সময় : আগস্ট ৪, ২০২৫, ১২:০৭ অপরাহ্ণ
নির্বাচন কমিশনে আশাশুনিকে পৃথক আসন ঘোষণার দাবিতে আবেদন দাখিল

হুসাইন বিন আফতাব, নিজস্ব প্রতিবেদক:

সাতক্ষীরা-৪ আসনের পুনঃসীমানা নির্ধারণ করে আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলা একীভূত করার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছে। সোমবার (৪ আগস্ট) উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম মাওলানা এ. এম. রিয়াছাত আলী বিশ্বাসের পুত্র নু. আ. ম. মুরতাজা আলী এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে এই আবেদন দাখিল করেন।

আবেদনে বলা হয়, স্বাধীনতার পর থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আশাশুনি ও শ্যামনগর দুটি পৃথক সংসদীয় আসন ছিল— যথাক্রমে সাতক্ষীরা-৩ (আশাশুনি) ও সাতক্ষীরা-৫ (শ্যামনগর)। এলাকাগুলো দুর্যোগপ্রবণ ও ভৌগলিকভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় পৃথক আসন থাকা ছিল বাস্তবসম্মত ও জনবান্ধব। তবে পরবর্তী সময়ে একটি রাজনৈতিক মতলবের অংশ হিসেবে শুধুমাত্র ভোটার সংখ্যা বিবেচনায় এনে সংসদীয় আসন কমানো হয় এবং সাতক্ষীরা-৩ ও সাতক্ষীরা-৫ একীভূত করে নতুনভাবে সাতক্ষীরা-৪ আসন গঠন করা হয়।

সম্প্রতি প্রকাশিত নির্বাচন কমিশনের খসড়া গেজেটে আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলাকে আবারও একীভূত করে সাতক্ষীরা-৪ নামক একটি মাত্র সংসদীয় আসন রাখা হয়। যা এলাকাবাসীর কাছে অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। কারণ হিসেবে আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আশাশুনি ও শ্যামনগর দুটি বৃহৎ উপজেলা। এর মধ্যে শ্যামনগর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উপজেলা এবং আশাশুনি নদীবেষ্টিত চারটি খণ্ডে বিভক্ত। অন্যদিকে, শ্যামনগর তিনটি খণ্ডে বিভক্ত এবং আশাশুনির সঙ্গে শ্যামনগরের সরাসরি কোনো সড়ক যোগাযোগ নেই।

প্রতি বছর নদীভাঙন ও জলাবদ্ধতার কারণে এ অঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠী দুর্ভোগে পড়ে। এমন বাস্তবতায় দশ লক্ষাধিক মানুষের এই বিস্তীর্ণ দুর্গম এলাকায় একজন সংসদ সদস্যের পক্ষে যথাযথ প্রতিনিধিত্ব ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ে। বিশেষত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, নদী ভাঙনরোধ, সড়ক-যোগাযোগ উন্নয়ন ও জনসেবায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।

এ কারণে জনস্বার্থে শুধুমাত্র ভোটার সংখ্যা নয়, ভৌগলিক বৈচিত্র্য ও দুর্যোগপূর্ণ প্রকৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে আশাশুনি ও শ্যামনগরকে পৃথক দুটি সংসদীয় আসনে পুনঃবিন্যস্ত করার জোর দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, সাতক্ষীরার সকল আসন পূর্বের সীমানা অনুযায়ী ফিরিয়ে আনারও দাবি জানানো হয়।

আবেদনে বলা হয়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কর্তৃক ৩১ জুলাই ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত খসড়া সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী তীব্র আপত্তি জানাচ্ছেন। অবিলম্বে উক্ত সিদ্ধান্ত বাতিল করে আশাশুনিকে পুনরায় সংসদীয় আসন ১০৭ (সাতক্ষীরা-৩) হিসেবে ঘোষণা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।