ভোমরা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি কৃষক আহত


প্রকাশের সময় : আগস্ট ৪, ২০২৫, ৯:০৮ পূর্বাহ্ণ
ভোমরা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি কৃষক আহত

দেশ জনতা ডেক্স :

সাতক্ষীরার ভোমরা ইউনিয়নের লক্ষীদাঁড়ি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে শেখ আলমগীর হোসেন (৩৫) নামের এক বাংলাদেশি কৃষক আহত হয়েছেন। সোমবার ভোরে সীমান্তের ১ নম্বর বিজিবি পোস্টসংলগ্ন শূন্যরেখায় এ ঘটনা ঘটে। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

 

আহত আলমগীর হোসেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার লক্ষীদাঁড়ি গ্রামের শেখ সাঈদ হোসেনের ছেলে। স্থানীয়ভাবে তিনি একজন খামারি হিসেবে পরিচিত। সীমান্তবর্তী সরকারি খাসজমিতে তার একটি মাছের ঘের রয়েছে। পরিবারের ভাষ্যমতে, টানা বর্ষণে ঘেরটি তলিয়ে যাওয়ায় সোমবার ভোররাতে তিনি ঘের ঘিরে রাখা নেট পরীক্ষা করতে যান। এ সময় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার ঘোজাডাঙা বিএসএফ ক্যাম্প থেকে টহলরত সদস্যরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে ছররা গুলিতে তার মাথা, মুখমণ্ডল ও চোখের আশপাশে আঘাত লাগে।

 

আহত অবস্থায় আলমগীর হোসেনকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয়রা এবং পরে মোটরসাইকেল চালক আবু হোসেন সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সকাল সাড়ে আটটার দিকে জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হলে চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছররা গুলির চিহ্ন রয়েছে এবং তিনি বর্তমানে চিকিৎসাধীন।

 

অন্যদিকে, স্থানীয় কিছু বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন। তাদের দাবি, আলমগীর হোসেন দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তে চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত। ঘটনার সময় তিনি চোরাচালানি পণ্য সংগ্রহ করতে সীমান্তে গিয়েছিলেন। বিএসএফ সদস্যরা তাকে ধাওয়া করলে তার সঙ্গে থাকা আরও দুজন সহযোগী পালিয়ে যায়, আর তিনি গুলিবিদ্ধ হন।

 

আলমগীরের পরিবার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, তিনি শুধুমাত্র মাছের ঘের রক্ষার্থে সেখানে গিয়েছিলেন। বিএসএফ কোনো রকম সতর্কবার্তা ছাড়াই গুলি চালায়।

 

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. এবিএম আখতার মারুফ বলেন, “আহত আলমগীরকে সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে হাসপাতালে আনা হয়। তার মাথা, মুখমণ্ডল ও চোখের আশেপাশে ছররা গুলির আঘাত রয়েছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং অবস্থার পর্যবেক্ষণ চলছে।”

 

এ বিষয়ে ভোমরা বিজিবি ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত সুবেদার জহির আহম্মেদ জানান, “আলম নামের একজন ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”

 

সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম জানান, “ঘটনার পরপরই উপপরিদর্শক সেকেন্দার আলীকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

 

সীমান্তে এ ধরনের গুলির ঘটনায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী এমন ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ভবিষ্যতে সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে।